২১ নভেম্বর ২০২৫, ১১:২১ অপরাহ্ন, ২৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, শুক্রবার, ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
আজকের ক্রাইম ডেক্স : সারা দেশের মতো কক্সবাজারের টেকনাফেও মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে ৫২৩ জন ভূমিহীন প্রধানমন্ত্রীর উপহারের পাকা ঘর পেয়েছে।
কৌশলে দুই রোহিঙ্গাও বাগিয়ে নিয়েছে উপহারের এ ঘর। বিনামূল্যে ৩০ কেজি চালের তালিকায়ও তাদের নাম রয়েছে। টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নে মৌলভীবাজারে বসবাসরত দুই রোহিঙ্গা উপহারের ঘর কীভাবে নিল-এমন প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে । এ নিয়ে এলাকায় চলছে তোলপাড়।
ভূমি অফিসের তালিকা সূত্রে জানা গেছে, উলা মিয়ার পুত্র সৈয়দ আলম ও নুর মোহাম্মদের পুত্র ছিদ্দিক আহমদ নামের দুজন রোহিঙ্গাকে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এসব রোহিঙ্গা উপহারের ঘরে বসবাসও করছে। এই রোহিঙ্গারা গোপনে বাংলাদেশি এনআইডি কার্ড তৈরি করে ভূমি অফিসে জমা দিয়েছে।
নিজের নামে উপহারের ঘরও হাতিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে। দুই বছর আগেই এই দুই রোহিঙ্গার নামে ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। শুধু উপহারের ঘর পেয়েছে তা নয়, বিডব্লিউবি আওতায়ভুক্ত বিনামূল্যের ৩০ কেজি চালের তালিকায়ও তাদের নাম রয়েছে। প্রতি মাসে তারা ৩০ কেজি করে সরকারি চালও পাচ্ছে বলে জানা গেছে।
জানতে চাইলে রোহিঙ্গা ছিদ্দিক আহমদ জানায়, তার নানার বাড়ি মিয়ানমারে ছিল। তারা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসা যাওয়া করত। মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে একেবারে চলে এসেছে ১৭ থেকে ১৮ বছর হবে।
তবে সে টেকনাফের নয়, চকরিয়ার ঠিকানা ব্যবহার করে বাংলাদেশি এনআইডি কার্ড করেছে। অপর রোহিঙ্গা ছৈয়দ আলম প্রকাশ লালাইক্কার কাছে জানতে চাইলে তারা অনেক আগেই মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে চলে এসেছে বলে দাবি করে।
সম্প্রতি ছৈয়দ আলমের দুই নাতির জন্মসনদ করার জন্য হ্নীলা ইউপির ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) বেলাল উদ্দিনের কাছে স্বাক্ষর নিতে যাওয়ার পরই ‘রোহিঙ্গা’ বিষয়টি উঠে আসে।
তখন ছৈয়দ আলমের পরিবারও রোহিঙ্গা নাগরিক, মেম্বারের কাছে সেই স্বীকারোক্তিও দেন। এতে রোহিঙ্গা হওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত হয়ে যায়। পরে ইউপি সদস্য বেলাল উদ্দিন এ রোহিঙ্গা পরিবারের জন্মসনদ বাতিল করার জন্য হ্নীলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বরাবর আবেদন করেন।
স্থানীয় মেম্বার বেলাল উদ্দিন বলেন, তারা রোহিঙ্গা সেটা নিজেরাও স্বীকার করেছে। তাদের জন্মসনদ বাতিল করার জন্য চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেছেন বলেও জানান মেম্বার বেলাল উদ্দিন।
হ্নীলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, কীভাবে রোহিঙ্গারা মুজিববর্ষের ঘর পেয়েছে তা আমার জানা নেই। টেকনাফ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুজ্জামান বলেন, এটা তার আগের ঘটনা, তদন্তপূর্বক সত্যতা পেলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি সিরিয়াসলি দেখবেন বলেও জানান তিনি।